*মন্দিরনগরি বিষ্ণুপুর – কয়েকটি বিখ্যাত মন্দির*
![]()
ডেস্ক : বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর যথার্থই এক মন্দিরনগরী। সারা বিষ্ণুপুর জুড়ে ছড়িয়ে আছে কত মন্দির। সামগ্রিকভাবে বিষ্ণুপুর বিশ্বের সর্ববৃহৎ পোড়ামাটি তথা টেরাকোটা শৈলীর মন্দির চত্বর। কলকাতা থেকে রেলপথে দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার। খ্রিষ্টীয় যুগের সূচনার অনেক আগেই বাঁকুড়া অঞ্চলে বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের বিকাশ ঘটেছিল। এখানকার বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান সে প্রমাণ দেয়। মধ্যযুগে শক্তিশালী মল্ল রাজত্বে বৈষ্ণব ধর্ম ও সুফী দর্শনে প্লাবিত হয়েছিল মল্লভূমি। পরবর্তীকালে বৈষ্ণব ধর্ম, সুফি আদর্শ, জৈন ও বৌদ্ধ দর্শন , হিন্দু ধর্ম এবং কৌম ধর্মাচরণের মিলমিশের মধ্যে দিয়ে দারুণ সৃষ্টিশীল এক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে বাঁকুড়ার বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে। বিষ্ণুপুরের কয়েকটি বিখ্যাত মন্দির –
রাসমঞ্চ –
বিষ্ণুপুরে ইটের তৈরি সবচেয়ে পুরনো স্থাপত্য এই রাসমঞ্চ। ১৬০০ সালে তৈরি করেছিলেন রাজা বীর হাম্বির। পোড়ামাটির ব্লক দিয়ে তৈরি বিরাট এক মঞ্চের ওপর তৈরি হয়েছে এই মন্দিরটি। পিরামিড আকৃতির উচ্চাংশের নীচে চারদিক ঘিরে রয়েছে কুটির আকৃতির নির্মাণ। রাস উৎসবের সময় অন্যান্য মন্দির থেকে বিষ্ণুর মূর্তি এনে রাখা হতো রাসমঞ্চে।
জোড়বাংলা মন্দির
মন্দিরটি যেন পরস্পর-সংলগ্ন দুটি কুটির। চূড়া একটিই। লালমাটির ইট দিয়ে তৈরি মন্দিরের গায়ে রয়েছে চমৎকার অলংকরণ। বাংলার মন্দির নির্মাণশৈলীর এক বিশিষ্ট উদাহরণ। মল্ল রাজা রঘুরাম সিং ১৬৫৫ সালে মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন।
রাধাশ্যাম মন্দির –
চারদিকে উঁচু পাঁচিলে ঘেরা বিরাট এক চত্বরে মন্দিরটির অবস্থান। মল্ল রাজা চৈতন্য সিংহ গঠনশৈলীতে খানিকটা স্বাতন্ত্র এনে এই মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন ১৭৫৮ সালে। চারকোনা আকৃতির একরত্ন মন্দিরের ওপরে রয়েছে একটি গম্বুজ। মন্দিরটির বাইরের দেওয়ালে রয়েছে চমৎকার সব রিলিফের কাজ। পৌরাণিক ও মহাকাব্যিক নানা দৃশ্য এবং জ্যামিতিক নানা প্যাটার্ন ব্যবহৃত হয়েছে মন্দিরের অলংকারের কাজে।
শ্যামরাই মন্দির –
পঞ্চরত্ন বা পঞ্চ-চূড়া মন্দির এটি। বিষ্ণুপুরের মন্দিরগুলির মধ্যে একটি বিশেষ আকর্ষণ এই শ্যামরাই মন্দির । মন্দিরের ভিতরে ও বাইরে দুর্দান্ত সব টেরাকোটার কাজ রয়েছে। কৃষ্ণলীলা, রাধাকৃষ্ণের প্রেম এবং রামায়ণ ও পৌরাণিক নানা কাহিনী ফুটিয়ে তোলা হয়েছে টেরাকোটার প্লেটের মাধ্যমে। রাজা রঘুনাথ সিংহ ১৬৪৩ সালে মন্দিরটি তৈরি করিয়েছিলেন।
মদনমোহন মন্দির –
মল্ল রাজা দুর্জন সিংহ দেব ১৬৯৪ সালে এই মন্দিরটি তৈরি করিয়েছিলেন। এক চূড়ার এই মন্দিরের গায়ের সূক্ষ্ম টেরাকোটার অলংকরণ খুঁটিয়ে দেখবার মতন।
সৌজন্যে: www.machinnamasta.in
Jun 13 2025, 08:59