*রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া হিন্দমোটরে, দু'দিন ধরে মায়ের দেহ আগলে বসে আছে ছেলে*
তিন দিন ধরে মায়ের মৃতদেহকে আগলে রেখে বসে রয়েছে ছেলে। সেই রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া এবার দেখা গেল হিন্দমোটরে। ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বেরতেই পুলিশদের খবর দেয় প্রতিবেশীরা। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দরজার তালা ভেঙে মৃতদেহটিকে উদ্ধার করে। হিন্দমোটরের ১ নম্বর বিএন দাস রোডে একটি আবাসনে ৬৫ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী কল্যাণী হাজরা থাকতেন তাঁর বছর ৩৫-এর ছেলেকে নিয়ে।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন বেশ কয়েকদিন ধরে তাঁদের ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ ছিল। তবে এদিন সকালে তাদের ফ্ল্যাটের পরিচারিকা গীতা দাস কাজ করতে আসেন। সে কল্যাণীদেবীর ফ্ল্যাটে বেল বাজাতেই দরজা খোলেন ছেলে শুভ্রনীল। ঘরে ঢুকতেই পচা দুর্গন্ধ পান গীতা। এরপরেই খাটে পড়ে রয়েছে কল্যাণীর নিথর দেহ দেখতে পান গীতা। ছেলে শুভ্রনীলকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, মা ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমোচ্ছে। তবে গীতাদেবী বুঝতে পারেন কল্যাণী মারা গিয়েছে। তাই বিষয়টি প্রতিবেশীদের জানাতে পরিচারিকা ফ্ল্যাট থেকে বেরনোর চেষ্টা করলে তাঁকে ফ্ল্যাটের ভিতর বেশ কিছুক্ষণ আটকে রাখে মানসিক ভারসাম্যহীন শুভ্রনীল।
গীতা ভয় পেয়ে চিৎকার শুরু করলে কল্যাণীর ছেলে দরজা খুলে দেন ঠিকই কিন্তু গীতা বেরিয়ে যেতেই আবার দরজায় খিল দিয়ে দেন শুভ্রনীল। কিছু ক্ষণের মধ্যে প্রতিবেশীদের জড়ো করেন গীতা। কিন্তু দরজা খোলেনি শুভ্রনীল। এরপর উত্তরপাড়ার পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পুলিশ এসে দরজার তালা ভেঙে কল্যাণীদেবীকে উদ্ধার করেন। পাশাপাশি এই ঘটনার খবর পেয়ে আবাসনে উপস্থিত হন কাউন্সিলর প্রবীর কংস বণিক। তিনি জানান, এলাকার মানুষের সঙ্গে সে ভাবে মেলামেশা করতেন না কল্যাণী এবং তাঁর ছেলে। তবে শুভ্রনীল যে মানসিক রোগী ছিলেন তা জানতেন না কাউন্সিলার। ইতিমধ্যেই পুলিশ শুভ্রনীলকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে। পাশাপাশি কল্যাণীদেবীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে । এই পুরো ঘটনাটি নিয়েব তদন্ত শুরু করেছে উত্তরপাড়ার পুলিশ।
Dec 02 2023, 18:39