টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে কলকাতা ২০২৫-এ পুরুষদের সামগ্রিক শিরোপা জয় জোশুয়া চেপ্টেগেই
নিজস্ব প্রতিনিধি:শীতল শীতের রবিবারে রবিবার টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে এক রোমাঞ্চকর প্রতিযোগিতার সাক্ষী থাকল—রেকর্ড ভাঙল, চ্যাম্পিয়নরা নিজেদের আধিপত্য প্রমাণ করল এবং ভারতীয় দীর্ঘদূরত্ব দৌড় আরেক ধাপ এগিয়ে গেল। আন্তর্জাতিক এলিট পুরুষ বিভাগে উগান্ডার জোশুয়া চেপ্টেগেই নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করলেও, দিনটি ছিল ভারতের গুলবীর সিং ও সীমার—দু’জনেই নিজেদের এলিট বিভাগে কোর্স রেকর্ড নতুন করে লেখেন।

ডাবল অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন চেপ্টেগেই শুরু থেকেই গতি নিয়ন্ত্রণে রেখে নেতৃত্ব দেন এবং কখনও তা ছাড়েননি। তিনি ১:১১:৪৯ সময়ে ফিনিশ করে নিজের প্রথম শিরোপা জেতেন। তাঞ্জানিয়ার আলফন্স ফেলিক্স সিম্বু (১:১১:৫৬) ও লেসোথোর তেবেলো রামাকোঙ্গোয়ানা (১:১১:৫৯)-কে পিছনে ফেলে টানটান লড়াইয়ের পোডিয়াম সম্পূর্ণ করেন। ২০২৩ সালে ড্যানিয়েল সিমিউ এবেনিও-র গড়া ১:১১:১৩ কোর্স রেকর্ড ছুঁতে না পারলেও, চেপ্টেগেইয়ের সংযত ও কর্তৃত্বপূর্ণ দৌড় ইভেন্টে তাঁর আধিপত্য আরও দৃঢ় করে। রেসের বড় অংশে তিনজনই কাছাকাছি ছিলেন—১৫ কিমি বা ২০ কিমিতে কোনও ফারাক ছিল না। তবে ২১.১ কিমি হাফ-ম্যারাথন পয়েন্টে ০১:০০:৪৯-এ অন্যদের সঙ্গে সমান অবস্থানে থেকে শেষ চার কিলোমিটারে গতি বাড়িয়ে জোশুয়া নিজের ছাপ রাখেন।

উগান্ডার ১০,০০০ মিটার ও ৫,০০০ মিটার বিশ্বরেকর্ডধারী জোশুয়া চেপ্টেগেই ১:১১:৪৯ সময়ে ফিনিশ লাইন অতিক্রম করে টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে কলকাতা ২০২৫-এ পুরুষদের সামগ্রিক শিরোপা জয় করেন। ছবিতে আরও রয়েছেন কেনি বেডনারেক, ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট অ্যাম্বাসাডর, টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে কলকাতা এবং সুজিত বসু, মন্ত্রী-ইন-চার্জ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট, ডব্লিউবিএএ।

ইথিওপিয়ার ডেগিতু আজিমেরাও ১:১৯:৩৬ সময়ে টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে কলকাতা ২০২৫-এ মহিলাদের সামগ্রিক শিরোপা জয় করেন। ছবিতে আরও রয়েছেন ভাইচুং ভুটিয়া, টিএসডব্লিউ ২৫কে রত্ন এবং বিবেক সাহায়, প্রেসিডেন্ট, ডব্লিউবিএএ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট, এএফআই।

১০,০০০ মিটার ও ৫,০০০ মিটার জাতীয় রেকর্ডধারী গুলবীর সিং নতুন ইভেন্ট রেকর্ড (১:১২:০৬) গড়ে ফিনিশ লাইনে।

ভারতীয় পুরুষ বিভাগের বিজয়ী ও নতুন ইভেন্ট রেকর্ডধারী গুলবীর সিং (১:১২:০৬), ছবিতে আরও রয়েছেন কেনি বেডনারেক, ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট অ্যাম্বাসাডর।

ভারতীয় মহিলা বিভাগের বিজয়ী ও নতুন ইভেন্ট রেকর্ডধারী সীমা ১:২৬:০৪ সময়ে ফিনিশ লাইনে।

১০ম টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে কলকাতায় রেকর্ড নতুন করে লেখলেন গুলবীর ও সীমা, প্রত্যাশা পূরণ করলেন জোশুয়া

দু’বারের চ্যাম্পিয়ন সুতুমে কেবেদেকে হারালেন ইথিওপিয়ার আজিমেরাও

জোশুয়া চেপ্টেগেই বলেন, “রেকর্ডের চেয়েও জয়টাই আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কলকাতায় ফিরে এসে জয় পাওয়া আমার জন্য বিশেষ। বেঙ্গালুরুতেও জিতেছি, আর এটি ছিল বিশ্বমানের অ্যাথলিটদের নিয়ে বড় রেস। এই জয় আমাকে পরের ম্যারাথনের প্রস্তুতিতে আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচকতা দেবে।”

আন্তর্জাতিক এলিট মহিলা বিভাগে ইথিওপিয়ার ডেগিতু আজিমেরাও দারুণ পারফরম্যান্সে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন সুতুমে আসেফা কেবেদেকে হারান। কলকাতা কোর্সে তৃতীয়বার দৌড়ে, ২০১৭-র বিজয়ী ও পরের বছর চতুর্থ হওয়া আজিমেরাও শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নেতৃত্ব দিয়ে ১:১৯:৩৬ সময় করেন। সুতুমে দ্বিতীয় হন ১:২০:২৮-এ, আর মেসেলেচ আলেমাইয়ু ১:২০:৪৮-এ তৃতীয় হয়ে ইথিওপিয়ার ক্লিন সুইপ সম্পন্ন করেন। আজিমেরাও জিতলেও কোর্স রেকর্ড সুতুমের কাছেই থাকে। শুরু থেকেই ডেগিতু দৌড়ের নিয়ন্ত্রণ নেন—১০, ১৫ ও ২০ কিমিতে কয়েক সেকেন্ডের লিড ২২ কিমিতে এক মিনিটে পরিণত হয় এবং ফিনিশে তিনি নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে প্রায় ৫০০ মিটার এগিয়ে থাকেন।

ডেগিতু বলেন, “এটা আগে থেকে পরিকল্পনা ছিল না। পা একটু শক্ত লাগছিল, তাই শুধু শক্তভাবে দৌড়ে যাওয়াতেই মন দিয়েছিলাম। ১০ কিমির পর পা ভালো লাগতে শুরু করে, তখন গতি বাড়াই এবং জিতি। আমি খুব খুশি।”

তবে দিনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় গল্পগুলো এসেছে ভারতীয় এলিট রেস থেকে। গুলবীর সিং বিরল কর্তৃত্বের দৌড়ে নিজেরই ভারতীয় কোর্স রেকর্ড থেকে দুই মিনিটের বেশি সময় কমান। মসৃণ ছন্দে শুরুতেই ভারতীয় প্যাকের সামনে উঠে এসে, কিছুক্ষণ আন্তর্জাতিক এলিটদের সঙ্গেও দৌড়ান, তারপর ১:১২:০৬ সময়ে ফিনিশ করেন। তিনি ২০২৪-এ নিজের গড়া ১:১৪:১০ রেকর্ড ভেঙে গত দুই মরসুমে তাঁর অসাধারণ উন্নতির প্রমাণ দেন। হারমানজোত সিং (১:১৫:১১) ও সাওয়ান বারওয়াল (১:১৫:২৫) পোডিয়াম পূর্ণ করেন। শুরু থেকেই গুলবীর আলাদা স্তরে ছিলেন—১৫ কিমি থেকেই নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে এক মিনিট এগিয়ে, যা ধীরে ধীরে দুই মিনিটে পৌঁছায়। ২১.১ কিমিতে গুলবীরের সময় ছিল ০১:০০:৫৮, হারমানজোতের ০১:০৩:১৭।

জয় নিয়ে এশিয়ান লং ডিস্ট্যান্স ডাবল গোল্ড মেডালিস্ট গুলবীর বলেন, “রেকর্ড হঠাৎ করে হয় না। ধারাবাহিকতা থেকেই আসে। শক্ত সমর্থন, নিবেদিত কোচ ও নিরলস অনুশীলনের সঙ্গে লক্ষ্য একটাই—গতকালের চেয়ে ভালো হওয়া। আমি নিজের জন্য কোনও সীমা বেঁধে দিই না। ডায়েট, ওয়ার্কআউট আর বিশ্রাম—এই-ই আমার সব। অগ্রগতি সময় নেয়, শর্টকাট নেই। ভারত ধাপে ধাপে এগোচ্ছে। যাত্রা দীর্ঘ, আর আমি সবে শুরু করেছি।”

ভারতীয় এলিট মহিলা বিভাগে সীমার জয়ও ছিল সমান জোরালো। নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসন ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে দৌড়ে, গত বছরের এশিয়ান ক্রস-কান্ট্রি চ্যাম্পিয়ন ও ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমসের রৌপ্যজয়ী সীমা ১:২৬:০৪ সময়ে ফিনিশ করে ২০১৭-তে সুরিয়া এল-র গড়া ১:২৬:৫৩ দীর্ঘদিনের রেকর্ড ভাঙেন। ব্যবধানই গল্প বলে দেয়—সঞ্জীবনী জাধব ১:৩০:৩৪-এ দ্বিতীয়, নির্মাবেন ঠাকুর ১:৩২:০২-এ তৃতীয়। ফিনিশে সীমা এতটাই স্বচ্ছন্দ ছিলেন যে শক্তিও অবশিষ্ট ছিল—প্রস্তুতি ও টেকনিক্যাল শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ। শুরু থেকেই তিনি আলাদা স্তরে ছিলেন—১০ কিমিতে এক মিনিট, ১৫ কিমিতে দেড় মিনিট, ২০ কিমিতে দুই মিনিটের বেশি লিড। ২১.১ কিমিতে ব্যবধান তিন মিনিটে পৌঁছায়। এরপর লক্ষ্য একটাই—ফিনিশ—এবং আট বছরের রেকর্ড মুছে দেন।

সীমা বলেন, “কোর্স রুট বদলানো হয়েছে, এখন এটি আরও চ্যালেঞ্জিং। তবু জয়ের মানসিকতা নিয়েই এসেছিলাম। এখানে কোর্স রেকর্ড করতে পেরে খুব খুশি, তবে আগের মতো কোর্স হলে আরও ভালো করতে পারতাম। জয়ের জন্য শৃঙ্খলা ও ত্যাগ দরকার—একজন অ্যাথলিট হিসেবে আমি সেটাই করি। এখন লক্ষ্য আগামী বছরের এশিয়ান ও কমনওয়েলথ গেমসের যোগ্যতা অর্জন।”

প্রাথমিক ফলাফলসমূহ:

সামগ্রিক আন্তর্জাতিক পুরুষ:
জোশুয়া চেপ্টেগেই (উগান্ডা) ১:১১:৪৯; আলফন্স ফেলিক্স সিম্বু (তাঞ্জানিয়া) ১:১১:৫৬; তেবেলো রামাকোঙ্গোয়ানা (লেসোথো) ১:১১:৫৯; কলিন্স কিপকোরির (কেনিয়া) ১:১২:০২; গুলবীর সিং (ভারত) ১:১২:০৬; ফিকাডু লিচে (ইথিওপিয়া) ১:১২:০৯; উইসলি ইয়েগো (কেনিয়া) ১:১২:১২; হাইমানোট আলেউ (ইথিওপিয়া) ১:১৪:৩৫; নিগুসে আবেরা (ইথিওপিয়া) ১:১৪:৩৮; হারমানজোত সিং (ভারত) ১:১৫:১১।

সামগ্রিক আন্তর্জাতিক মহিলা:
ডেগিতু আজিমেরাও (ইথিওপিয়া) ১:১৯:৩৬; সুতুমে আসেফা কেবেদে (ইথিওপিয়া) ১:২০:২৮; মেসেলেচ আলেমাইয়ু (ইথিওপিয়া) ১:২০:৪৮; কুফতু তাহির (ইথিওপিয়া) ১:২৩:৩২; ডেমিলিউ জেমেনাও (ইথিওপিয়া) ১:২৩:৩৪; নেটসানেত তাফেরে (ইথিওপিয়া) ১:২৩:৫৬; রেডিয়েত ড্যানিয়েল (ইথিওপিয়া) ১:২৪:১৮; আবেরাশ মিনসেও (ইথিওপিয়া) ১:২৪:৪৮; এরগাত হেশে (ইথিওপিয়া) ১:২৪:৫৯; সীমা (ভারত) ১:২৬:০৪।

ভারতীয় পুরুষ:
গুলবীর সিং ১:১২:০৬ (নতুন ইভেন্ট রেকর্ড); হারমানজোত সিং ১:১৫:১১; সাওয়ান বারওয়াল ১:১৫:২৫; কার্তিক কার্কেরা ১:১৬:৪৮; অভিষেক পাল ১:১৭:৫৫; হেমন্ত সিং ১:১৮:৫৩; গৌরব মাথুর ১:১৯:২৯; পুনীত যাদব ১:২২:০০; শঙ্কর স্বামী ১:২৪:০০; অনীশ চ্যান্ডেল ১:২৬:১৫।

ভারতীয় মহিলা:
সীমা ১:২৬:০৪ (নতুন ইভেন্ট রেকর্ড); সঞ্জীবনী জাধব ১:৩০:৩৪; নির্মাবেন ঠাকুর ১:৩২:০২; উজালা ১:৩২:৪৯; ভাগীরথী ১:৩৩:২৩; আরতি পাওয়ারা ১:৩৬:৪৩; ফুলান পাল ১:৪১:১৮।

বিজয় দিবস ট্রফি:
ইন্ডিয়ান নেভি ১ (বিনোদ সিং, প্রকাশ দেশমুখ, নীতেশ কুমার রাঠভা) ৪:০০:৪০; ইন্ডিয়ান আর্মি ১ (সরোজ কুনওয়ার, শিবম সিং, সন্দীপ সিং) ৪:০১:১৫; ইন্ডিয়ান আর্মি ৫ (জীবন সিং, আনন্দ সিং রাওয়াত, ভীম সিং) ৪:০৩:০৩।

পুলিশ কাপ বিজয়ীরা:
পুরুষ দল—টিম ১৩ (কৃষ্ণেন্দু মণ্ডল, মানস দাস, পঞ্চানন দত্ত) ০:৩৭:১১; টিম ২৭ (প্রসান্ত পাত্র, মো. ওয়াজেদ আলি, রবীন্দ্রনাথ মাইতি) ০:৩৯:২৩; টিম ২৮ (একবুল শেখ, অর্ধেন্দু মল্লিক, কৌশিক মণ্ডল) ০:৪০:৩৯।
মহিলা দল—টিম ১৪ (মৌমিতা খামরাই, তনুশ্রী মুর্মু, পূজা বিশ্বাস) ০:৫৬:৩৯; টিম ১১ (শ্রেয়া নন্দী, জান্নাতুন খাতুন, মৌমিতা প্রামাণিক) ০:৫৭:৩৮; টিম ১৩ (তুস্মিতা রায়, বিউটি রায়, জয়শ্রী হাঁসদা) ১:০১:৩২।

রান ইন কস্টিউম:
সোলো: ১ম—ইন্দ্রাক্ষী হালদার; ২য়—সৌমি দাস
গ্রুপ: ১ম—Run for Pause; ২য়—GD Birla বি:সঞ্জয় হাজরা
কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে আন্তর্জাতিক শীর্ষস্থানীয় অ্যাথলিটরা


ডেস্ক: টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে কলকাতা ২০২৫ , কলকাতার ঐতিহাসিক ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে আন্তর্জাতিক শীর্ষস্থানীয় অ্যাথলিটরা (বাঁ দিক থেকে ডানে): আলফন্সে ফেলিক্স সিম্বু (তানজানিয়া), অ্যাগনেস কেইনো (কেনিয়া), জোশুয়া চেপ্টেগেই (উগান্ডা), সুতুমে আসেফা কেবেদে (ইথিওপিয়া), টেবেলো রামাকোঙ্গা (লেসোথো) এবং দেগিতু আজিমেরাও (ইথিওপিয়া)। ছবি :- প্রোকাম এর সৌজন্যে
কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে আন্তর্জাতিক শীর্ষস্থানীয় অ্যাথলিটরা
ডেস্ক: টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে কলকাতা ২০২৫ , কলকাতার ঐতিহাসিক ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে আন্তর্জাতিক শীর্ষস্থানীয় অ্যাথলিটরা (বাঁ দিক থেকে ডানে): আলফন্সে ফেলিক্স সিম্বু (তানজানিয়া), অ্যাগনেস কেইনো (কেনিয়া), জোশুয়া চেপ্টেগেই (উগান্ডা), সুতুমে আসেফা কেবেদে (ইথিওপিয়া), টেবেলো রামাকোঙ্গা (লেসোথো) এবং দেগিতু আজিমেরাও (ইথিওপিয়া)।

ছবি :- প্রোকাম এর সৌজন্যে
কলকাতায় ভারতের শীর্ষ এলিট অ্যাথলিটরা

ডেস্ক: টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে কলকাতা ২০২৫ – ইভেন্ট মিডিয়া সেন্টারে ভারতের শীর্ষ এলিট অ্যাথলিটরা (বাঁ দিক থেকে ডানে): ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ও ইভেন্ট রেকর্ডধারী গুলবীর সিং, ভারতীয় শীর্ষ অ্যাথলিট সাওয়ান বারওয়াল, ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন সঞ্জীবনী যাদব এবং ভিডিএইচএম ২০২৫ বিজয়ী সীমা। ছবি: সঞ্জয় হাজরা
বসিরহাট পৌরসভার বোর্ড ভেঙ্গে প্রশাসক নিয়োগ


ডেস্ক: উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট পৌরসভাকে ঘিরে দীর্ঘ
টানাপোড়েনের অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রশাসনিক দায়িত্বভার তুলে দেওয়া হল। বসিরহাটের মহকুমা শাসক জসলিন কৌরের শনিবার দ্বায়িত্ব ভার গ্রহণ করলেন।শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে পৌরবোর্ড ভেঙে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বসানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হতেই গোটা বসিরহাট জুড়ে ছড়ায় উত্তেজনা। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যেও শুরু হয়েছে জোর আলোচনা।কেউ বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে ওঠা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগই পুরবোর্ড ভাঙার মূল কারণ। আবার কারও মতে, শাসক দলের অন্দরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই রাজ্য সরকারকে এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। পৌরসভা ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাট পৌরসভার মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ২৩ হলেও একজন কাউন্সিলারের মৃত্যুর কারণে বর্তমানে কাউন্সিলার ছিলেন ২২ জন।দীর্ঘ সময় ধরেই পৌর এলাকার নানা সমস্যা নিয়ে ক্ষোভ জমছিল বাসিন্দাদের মধ্যে। বেহাল রাস্তা, আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের ঘাটতি, পর্যাপ্ত আলো না থাকা, নিকাশি ব্যবস্থার দুরবস্থা এবং একের পর এক আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসে। পাশাপাশি পৌরসভার শাসকপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও ওঠে। এই সব অভিযোগ তুলে গত ৯ নভেম্বর শতাধিক মানুষ প্রতিবাদে নামেন এবং পরে লিখিতভাবে রাজ্যের পৌরমন্ত্রীকে অভিযোগ জানানো হয়।সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই রাজ্য সরকার ১৮ নভেম্বর বসিরহাট পুরসভার ২২ জন কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে শোকজ নোটিশ জারি করে। তবে শোকজের উত্তরে সরকার সন্তুষ্ট না হওয়ায় এক মাসের মধ্যেই পুরবোর্ড ভেঙে দিয়ে প্রশাসকের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ফলে আপাতত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাত থেকে সরে গেল পৌরসভার প্রশাসনিক ক্ষমতা।
এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বসিরহাট বিজেপির নেতা সুকল্যান বৈদ্য। তাঁর দাবি, বিভিন্ন প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই উঠছিল এবং সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছিল। তাই পুরবোর্ড ভেঙে প্রশাসক বসানো ছিল সময়োপযোগী পদক্ষেপ। তাঁর মতে, পৌর এলাকার মানুষও এই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলেন।কংগ্রেস নেতা অমিত মজুমদার জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা পৌরপ্রধানকে আর্থিক অনিয়ম ও টাকা নয়ছয়ের বিষয়ে সতর্ক করে আসছিলেন। উন্নয়ন যেন স্বচ্ছভাবে হয়, সে বিষয়েও একাধিকবার আলোচনা হয়েছে বলে তাঁর দাবি। সময়মতো সেই সতর্কবার্তা গুরুত্ব দিয়ে শোনা হলে আজকের পরিস্থিতি তৈরি হত না বলেই মত তাঁর।সিপিএম নেতা বিশ্বজিত বসুর অভিযোগ, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা লুট হয়েছে। তাঁর দাবি, শুধু বিরোধী দল নয়, পৌর এলাকার সাধারণ মানুষ এমনকি কাউন্সিলারদের একাংশও ক্ষুব্ধ হয়ে পৌরমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
অন্যদিকে, বসিরহাট পুরসভার প্রাক্তন পৌরপ্রধান তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী অদিতি মিত্র রায়চৌধুরী জানান, এখন থেকে পৌরসভা পরিচালনার সম্পূর্ণ দায়িত্ব মহকুমা শাসকের হাতেই থাকবে। দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তিনি তা মেনে চলবেন বলেও স্পষ্ট করেন।
সব মিলিয়ে দীর্ঘদিনের অভিযোগ, রাজনৈতিক চাপানউতোর ও প্রশাসনিক অচলাবস্থার পর অবশেষে বসিরহাট পৌরসভা চলে গেল প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণে। এখন প্রশাসকের নেতৃত্বে পৌর এলাকার পরিকাঠামো ও নাগরিক পরিষেবার কতটা উন্নতি হয়, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন বসিরহাটের বাসিন্দারা।
ব্যারাকপুরে বিজেপির সংকল্প যাত্রা
নিজস্ব সংবাদদাতা: ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে রাজ্যে জুড়ে বিজেপির পক্ষ থেকে আয়োজন করা হচ্ছে সংকল্প যাত্রার। ব্যারাকপুরে সেই সংকল্প যাত্রার মঞ্চ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে খোঁচা দিলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদিকা তথা প্রাক্তন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের।এদিনের কর্মসূচি শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দু'কোটি যুবকের কর্মসংস্থান হওয়ার বক্তব্যকে কটাক্ষ করে লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যখন এই দাবি করছেন তখন তিনি শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন। এবং গোটা তথ্য সামনে আনুন। এছাড়াও মাইক্রোও অবজার্ভার নিয়োগ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের আপত্তির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস আসলে ভয় পাচ্ছে সঠিক তথ্য বাইরে চলে আসার।

ছবি: প্রবীর রায়
*১০ তম টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে-র অংশ হতে উচ্ছ্বসিত বেডনারেক*

নিজস্ব প্রতিনিধি: অলিম্পিক রৌপ্যজয়ী ও মার্কিন স্প্রিন্ট তারকা কেনি বেডনারেক, "টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে" কলকাতার আন্তর্জাতিক ইভেন্ট অ্যাম্বাসাডর হিসেবে ভারতের অন্যতম প্রধান দূরত্ব দৌড় প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে তাঁর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের আন্তর্জাতিক মানের রেস মানুষকে জীবনযাত্রার অঙ্গ হিসেবে ফিটনেস গ্রহণে অনুপ্রাণিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।"
এলিট পর্যায়ে পারফর্ম করার জন্য কী প্রয়োজন,সে বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বেডনারেক শারীরিক সক্ষমতার চেয়েও মানসিকতার গুরুত্বের উপর জোর দেন।
তিনি বলেন, “আপনি শারীরিকভাবে প্রস্তুত ও অত্যন্ত প্রতিভাবান হতে পারেন, কিন্তু রেসের দিনে মানসিকভাবে শক্ত না হলে তার কোনও মূল্য থাকে না। স্প্রিন্টিং প্রায় ৯০ শতাংশ মানসিক বিষয়—শৃঙ্খলা, দায়িত্ববোধ, আত্মবিশ্বাস এবং রিকভারি ধারাবাহিকভাবে সর্বোচ্চ স্তরে পারফর্ম করার মূল চাবিকাঠি।”
এছাড়াও তিনি এদিন নিজের যাত্রাপথের কথা বলতে গিয়ে বেডনারেক ধারাবাহিক উন্নতি ও শেখার গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “আমি সবসময় শিখছি এবং প্রতি বছর নিজেকে আরও ভালো করার চেষ্টা করছি। জেতার পরেও আমি নিজেকে এবং আমার টিমকে জিজ্ঞাসা করি—আর কীভাবে উন্নতি করা যায়। পরিপূর্ণতা বলে কিছু নেই, আছে শুধু অগ্রগতি।” জিডি বিড়লা সেন্টার ফর এডুকেশন-এর ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথোপকথনের সময় তিনি এ কথা জানান।
প্রসঙ্গত,কেনি বেডনারেক বিশ্বের অন্যতম সেরা স্প্রিন্টার। তিনি টোকিও ২০২০ ও প্যারিস ২০২৪ অলিম্পিকে পুরুষদের ২০০ মিটারে দ্বৈত রৌপ্যপদকজয়ী এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্যজয়ী। নিয়মিত ডায়মন্ড লিগ পারফরমার হিসেবে তাঁর ব্যক্তিগত সেরা সময় ১৯.৪৯ সেকেন্ড, এবং তিনি বিশ্বমঞ্চে মার্কিন স্প্রিন্টিংয়ের অগ্রভাগে রয়েছেন।মার্কিন স্প্রিন্টিংয়ের পুনরুত্থান প্রসঙ্গে বেডনারেক বলেন, ভবিষ্যৎ অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।তিনি বলেন, “আমেরিকান স্প্রিন্টিং সবসময়ই শক্তিশালী ছিল। উসেইন বোল্ট ছিলেন একেবারেই আলাদা স্তরের, কিন্তু এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র খুব ভালো জায়গায় রয়েছে। সামনে বড় চ্যাম্পিয়নশিপ রয়েছে এবং নিজ দেশে অলিম্পিক আসছে—আগামী কয়েক বছর আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।”
ভারতীয় অ্যাথলেটিক্স সম্পর্কে নিজের মতামত জানিয়ে বেডনারেক আশাবাদ ব্যক্ত করেন।তিনি বলেন, “ভারতে প্রচুর প্রতিভা রয়েছে। সঠিক কোচিং, প্রশিক্ষণ কাঠামো এবং রিকভারি সিস্টেম থাকলে এখানকার অ্যাথলেটরা বিশ্বমঞ্চে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করতে পারে।” ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে বেডনারেক আরও বলেন,
“অর্থপূর্ণ যেকোনো উপায়ে অবদান রাখতে আমি সবসময়ই আগ্রহী—হোক তা আলোচনা, মেন্টরশিপ বা অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া। খেলাধুলার শক্তি জীবন বদলে দিতে পারে, আর আমার উপস্থিতি যদি ভারতে সেই যাত্রাকে সমর্থন করতে সাহায্য করে, তবে তার অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত হব।” ছবি: Procam.
কাটল না কলকাতার চিংড়িঘাটা মেট্রোর জট
নিজস্ব প্রতিনিধি: আজও কাটল না চিংড়িঘাটা মেট্রোর জট। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে দ্বিতীয় বৈঠকের পরেও মিলল না রফাসূত্র।আদালতের নির্দেশে ১৭ ডিসেম্বর হয় বৈঠক।আরভিএনএল এর আইনজীবীর দাবি,২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের কোনো এক সময় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।রাজ্যের সওয়াল,দশকের পর দশক ধরে কাজ চলছে। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে আরভিএনএল এর অসুবিধা কোথায় ? আরভিএনএল দাবি,মাত্র তিন দিন রাত ১০ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করলেই আমাদের কাজ শেষ হয়ে যাবে। এদিন  ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি পার্থ সারথী সেনের ডিভিশন বেঞ্চের রাজ্যকে নির্দেশ জানুয়ারি মাসে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব কিনা আগামী সোমবার জানান। তবে এদিন বৈঠকে নিজে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছিলেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। আজ তিনি জানান যে তিনি বৈঠকে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানি।
টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫ কে কলকাতা
নিজস্ব প্রতিনিধি: কর্পোরেট সংস্থা, ব্যক্তিগত উদ্যোগ, দৌড়বিদ ও ৪০টি এনজিও মিলিয়ে টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে কলকাতায় সংগৃহীত হল  ৩২.১২ লক্ষ টাকা।সংগৃহীত এই তহবিল ১২টিরও বেশি সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যয় করা হবে, যা সমাজে অর্থবহ প্রভাব ফেলবে।"টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে" কলকাতার ঐতিহাসিক ১০ম সংস্করণের রেস উইক শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই দৌড় একঘেয়েমিকে রীতিতে এবং পার্থক্যকে উত্তরাধিকারতে রূপান্তরিত করেছে, পূর্ব ভারতের উদীয়মান সূর্য হিসেবে নিজের অবস্থান দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করেছে। ৪৩টি এনজিও, ২৬ জনের বেশি ব্যক্তিগত ফান্ডরেইজার এবং ১০টি কর্পোরেট সংস্থার সহায়তায়, হাজার হাজার দাতার অংশগ্রহণে, টাটা স্টিল ওয়ার্ল্ড ২৫কে কলকাতা এখনও পর্যন্ত দাতব্য খাতে ৩২.১২ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেছে। এই সংস্করণের ফান্ডরেইজিং চলবে ৩ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত।
ইমপ্যাক্ট৩৬০ ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বে, যা এই ইভেন্টের ফিলান্থ্রপি পার্টনার, একটি ‘কারণ-নিরপেক্ষ’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগকে সমর্থন করে আসছে। এই প্ল্যাটফর্ম ব্যক্তি, তরুণ সমাজসেবী ও কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে বৃহত্তর সামাজিক পরিবর্তনের অংশ হতে অনুপ্রাণিত করে এবং এনজিওগুলিকে বাস্তব প্রভাব তৈরিতে সক্ষম করে।২০১৪ সাল থেকে এই প্ল্যাটফর্ম উত্তর-পূর্ব ও পূর্ব ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করা ৭৫টিরও বেশি এনজিওকে সহায়তা করে ৪.৭০ কোটিরও বেশি টাকা সংগ্রহ করেছে, যার ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। এই উত্তরাধিকার কেবল পদক বা ব্যক্তিগত সাফল্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি এক দশকের সামাজিক পরিবর্তন, উদারতার বিস্তার, উন্নততর সম্প্রদায় গঠন এবং গর্বের অনুভূতি তৈরি করেছে। এই আন্দোলন বিশ্ব দূরত্ব দৌড়ের মানচিত্রে কলকাতার নাম খোদাই করেছে।এই সংস্করণের ফিলান্থ্রপি ড্রাইভ সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে ইমপ্যাক্ট৩৬০ ফাউন্ডেশনের সিইও দেবাশিস রায় চৌধুরী বলেন,“এই বছর টিএসডব্লিউ২৫কে ‘এক দশকের পার্থক্য’ উদযাপন করছে—বয়স ও সক্ষমতার ঊর্ধ্বে উঠে
অংশগ্রহণমূলক ক্রীড়ার পক্ষে দশ বছরের অঙ্গীকার এবং একই সঙ্গে দাতব্য প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সামাজিক উদ্যোগে ব্যাপক অংশগ্রহণে অনুপ্রেরণা। ফিলান্থ্রপি পার্টনার হিসেবে কর্পোরেট, সামাজিক সংগঠন, রানার্স ক্লাব ও ব্যক্তিগত দাতাদের অসাধারণ সমর্থনে আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। একসঙ্গে আমরা আগের কয়েক বছরের অবদানকেও ছাড়িয়ে গেছি, যা এই আন্দোলনের পেছনের সম্মিলিত আবেগকে প্রতিফলিত করে।”

ছবি সৌজন্যে: আয়োজক সংস্থা।
বসিরহাটের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আবারও প্রাণ ফেরালো নাটকের উৎসব
নিজস্ব সংবাদদাতা,বসিরহাট : বসিরহাটের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আবারও প্রাণ ফেরাল নাটকের উৎসব। শহরের ঐতিহ্যবাহী রবীন্দ্রভবনে বসিরহাট মহকুমা নাট‍্য উৎসব '২৫ এর শুভ সূচনা হলো জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে। উৎসবের সূচনা করেন পশ্চিমবঙ্গ নাট্য অ্যাকাডেমীর সদস্যা অর্পিতা ঘোষ। শিল্পী, সংস্কৃতিপ্রেমী ও নাট্যকর্মীদের উপস্থিতিতে প্রথম দিন থেকেই উৎসবমুখর হয়ে ওঠে রবীন্দ্রভবন চত্বর।
বসিরহাট পৌরসভার সৌজন্যে এবং উত্তর ২৪ পরগণা জেলা আরটিএ সদস্য সুরজিৎ মিত্র বাদলের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত এই এক সপ্তাহব্যাপী নাট্য উৎসব শুধু শহরকেন্দ্রিক নয়, বরং গোটা জেলার নাট্যচর্চাকে এক মঞ্চে এনে দাঁড় করিয়েছে। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চল ন্যাজাট, কালিনগর ও হাড়োয়া থেকে শুরু করে সীমান্তবর্তী স্বরূপনগর ও কাটিয়াহাটের পাশাপাশি শহর বসিরহাট, টাকি ও বাদুড়িয়া সহ জেলার নানা প্রান্ত থেকে মোট ২০টি নাট্য দল অংশগ্রহণ করছে এই উৎসবে। ফলে গ্রাম ও শহরের নাট্যধারার এক অনন্য মেলবন্ধন তৈরি হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অর্পিতা ঘোষ বলেন, "নাটক শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, সমাজের দর্পণ। আজকের সময়ে এই ধরনের মহকুমা স্তরের নাট্য উৎসব নতুন প্রজন্মকে থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত করতে বড় ভূমিকা নেবে।" তার কথায় উঠে আসে গ্রামবাংলার নাট্যচর্চাকে মূলস্রোতে আনার গুরুত্ব। এই নাট্য উৎসবের সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছেন বসিরহাট পৌরসভার পৌরমাতা অদিতি মিত্র রায়চৌধুরী। আয়োজকদের তরফে জানানো হয়, বসিরহাটকে সাংস্কৃতিক মানচিত্রে আরও উজ্জ্বল করে তুলতেই এই ধরনের উদ্যোগ ধারাবাহিকভাবে নেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় একের পর এক নাট্যপ্রদর্শনী দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
উৎসবের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হিসেবে নজর কেড়েছে নৈহাটি ব্রাত্যজনের প্রযোজনা 'আনন্দ'। এই নাটকে অভিনয় করেছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক। রাজনীতির ব্যস্ততার মাঝেও তার মঞ্চে উপস্থিতি দর্শকদের মধ্যে বাড়তি আগ্রহ তৈরি করে। শক্তিশালী অভিনয়, ভাবনার গভীরতা ও মঞ্চসজ্জার মাধ্যমে নাটকটি দর্শকমনে গভীর ছাপ ফেলেছে।
সব মিলিয়ে বসিরহাট মহকুমার নাটক উৎসব '২৫ শুধু একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নয়, বরং বসিরহাটের নাট্যকর্মীদের মিলনমেলা হয়ে উঠেছে। এক সপ্তাহ ধরে চলা এই উৎসবের মাধ্যমে নাটকের ভাষায় উঠে আসছে সমাজ, মানুষ ও সময়ের নানা গল্প। যা বসিরহাটের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করছে।