৭ দিন ব্যাপী চলবে ২৭ তম গীতা জয়ন্তী মহোৎসব
নদীয়া:আজ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার ৫১৬০ তম বার্ষিকী। আজকের এই দিনে কুরুক্ষেত্রের রণাঙ্গনে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞান শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার জ্ঞান প্রদান করেছিলেন । যা বিশ্ববাসীর কাছে অদ্বিতীয় ধর্মগ্রন্থ। এত বছর বাদেও রাজনীতি সমাজ সংসারের প্রতিটি পদক্ষেপেই রয়েছে গীতায় বর্ণিত ইঙ্গিত, ধার্মিকরা অনেকে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক যুক্তি ও খুঁজে পান এর মধ্য দিয়েই। তাই আখ্যা দিয়েছেন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থ। ইস্কনের প্রধান কেন্দ্র নবদ্বীপ মায়াপুরে পালিত হলো ২৭ তম গীতা জয়ন্তী মহোৎসব। উপস্থিত দেশ বিদেশের কয়েক হাজার ভক্ত। কেউ বা মোবাইল ফোনে পড়ছেন কেউ বা বইয়ের দিকে নজর, এমনই ভাবে কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতিতে প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও ইস্কন এর প্রধান কেন্দ্র শ্রীধাম মায়াপুরে মহাসমারোহে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হলো ২৭ তম গীতা জয়ন্তী মহোৎসব।
১৭ ই ডিসেম্বর ২০২৩ রবিবার থেকে ২৩ শে ডিসেম্বর ২০২৩ শনিবার ৭ দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত দেশ বিদেশের কয়েক হাজার ভক্ত। শ্রীধাম মায়াপুর এখন বিশ্ববাসীর কাছে পারমার্থিক জ্ঞান আহোরনের অন্যতম পীঠস্থান। ভক্তিবেদান্ত গীতা অ্যাকাডেমী ভারতবর্ষে বিশেষত বাংলা, ইংরেজি, ও হিন্দি ভাষায় গীতা স্টাডি কোর্সের মাধ্যমে শ্রীল প্রভুপাদের গীতা ও ভাগবত পড়ার সুবর্ণ সুযোগ করে দিয়েছে।শনিবার সকাল থেকেই কয়েক হাজার ভক্ত সমাগমে বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হয় এই মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের।
ইস্কনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস জানান
গীতার জ্ঞানালোকে বিশ্ববাসীর হৃদয়কে উদ্ভাসিত ও গীতা অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীদের মনোবলকে বৃদ্ধি করতেই এই মহান উৎসবের আয়োজন।
পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আজ থেকে ৫১৫৬ বছর পূর্বে হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রের সমরাঙ্গনে অমিত শক্তিশালী ধনুর্ধর অর্জুনকে গীতার জ্ঞান দান করেছিলেন এই শুভ তিথিতে।পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হতাশাগ্রস্ত অর্জুনের মধ্যে জ্ঞানগর্ভ কথোপকথনই গীতা।সেই ঐতিহ্য স্মরণ করে প্রতিবৎসর এই উৎসব পালন করা হয়।
গীতাকে বলা হয় মানব ধর্মতত্ত্বের একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ। আজ থেকে ৫১৫৬ বছর পূর্বে ভগবদ্গীতার দিব্যজ্ঞান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে প্রদান করলেও গীতার চতুর্থ অধ্যায়ে বলা হয়েছে যে, এর পূর্বেও তিনি এই জ্ঞান অন্যকে প্রদান করেছিলেন।
ভগবদ্গীতা মানবজাতীর জন্য কৃষ্ণের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপহার। প্রকৃতপক্ষে তাঁর উদ্দেশ্য ছিল মানবজাতীকে জড়-জাগতিক অজ্ঞতা থেকে উদ্ধার করা।
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুন যখন কৌরবপক্ষে তার আত্মীয়দের বিরুদ্ধে ধর্মযুদ্ধে অসমর্থ, তখন কৃষ্ণ জীবনের সত্য এবং কর্ম, জ্ঞান, ধ্যান এবং ভক্তির দর্শন তাঁর কাছে ব্যাখ্যা করেছিলেন। যার ফলে বিশ্বের অন্যতম বড় ধর্মগ্রন্থ ভগবদ্গীতা প্রকাশিত হয়।
জাতি ধর্ম, বর্ণ ও রাজনৈতিকতার উর্দ্ধে মানবজাতির কল্যাণে গীতা পাঠ সকলের অবশ্য পাঠ্য।
আত্ম- মুক্তি ও জগৎ কল্যাণ সাধনের জন্য গীতার অমৃতময় বানী বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমাদের এই সন্মিলিত প্রচেষ্টা।পাঠ্য পুস্তক হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গীতা পাঠের জন্য সুশীল সমাজের এবং সরকারের কাছে আমাদের একান্ত অনুরোধ, আপনারাও এই শুভ উদ্যোগে সামিল হোন।সব মিলিয়ে ২৪ শে ডিসেম্বর ব্রীগেডের মাঠে লক্ষ্য কন্ঠে গীতা পাঠ অনুষ্ঠানের পূর্বে ইস্কনের আয়োজনে গীতা জয়ন্তী মহোৎসব অনুষ্ঠান যথেষ্ট তাৎপর্য বহন করলো বলেও মত ওয়াকিবহাল মহলের।
Dec 24 2023, 09:45