*প্রাক্তনীরা তো বটেই শিক্ষক-শিক্ষিকা এমনকি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরাও বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দিলো রক্ত*
নদীয়া:
রক্তদান শিবির এখন আর আগের মতন প্রতিকূলতার মতো পরিস্থিতিতে নেই। সরকারি বেসরকারি সামাজিক সংগঠন এমনকি সচেতন সুনাগরিকদের প্রচেষ্টায় এখন প্রায় সকলেই সচেতন। তাই রক্তের অভাবে মৃত্যুর হারও কমেছে অনেক। তবে নতুন ভোটারের মতন নতুন রক্ত দেওয়ার অভিজ্ঞতা ও আলাদা। বিশেষ করে স্কুলে পড়া ছাত্রছাত্রীদের।
আজ নদীয়ার শান্তিপুর এম এন উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আগে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্কুলের মধ্যেই আয়োজন করে রক্তদান শিবিরের। যেখানে প্রাক্তনীরা বটেই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা শিক্ষা কর্মী থেকে শুরু করে অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও আমন্ত্রিত হিসেবে এসে দিয়ে গেলেন রক্ত।
বয়সজনিত কারণে বেশিরভাগ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীর ইচ্ছা থাকলেও এ মহান উদ্যোগে দাতা হিসেবে অংশগ্রহণ করতে পারেনা।
তবে সে বাধাও অতিক্রান্ত হয়েছে আজ এম এন উচ্চ বিদ্যালয় এর রক্তদান শিবিরে , দেবজিৎ সেন দীপঙ্কর বিশ্বাসদের মতন দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়া ছাত্ররা আগামী উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য পড়াশুনায় রয়েছে ব্যস্ত কিন্তু বিদ্যালয়ে প্রাক্তনী হয়ে যাওয়ার আগে এ সুযোগ হাতছাড়া করেনি তারা।
দেবজিত সেন বলে, স্কুলের বন্ধুরাই সামাজিক দায়িত্ব পূরণে মানুষের পাশে থাকার জন্য একটি সংগঠন গড়ে তুলেছে। তাই এ ধরনের নানা সামাজিক কর্মকান্ড বছরে মাঝেমধ্যে অনুষ্ঠিত হলেও রক্তদাতা হিসেবে ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে মাত্র কয়েক মাস আগে। তবে প্রথম রক্ত দিতে পেরে খুব আনন্দিত।
অন্যদিকে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়া অপর এক ছাত্র দীপঙ্কর বিশ্বাস জানায়, সম্প্রতি কয়েক মাস আগে বিদ্যালয়ের সার্ধশতবর্ষ পালনের সময় রক্তদানের বিভিন্ন রকম আয়োজন করলেও দাতা হিসেবে অংশগ্রহণ করতে পারেনি বয়স জনিত কারণে। এবারে সেই ইচ্ছা পূরণ হলো। বিদ্যালয়ে প্রাক্তনী হওয়ার আগে রক্ত দিতে পেরে খুশি অন্যরাও। সপ্তম শ্রেণীতে পড়া চন্দন পাটোয়ারী অবশ্য রক্ত দেওয়ার উপযুক্ত বয়স হতে ঢের দেরি কিন্তু অন্যান্য রক্তদাতাদের সেবা- শুশ্রুষা করতে পেরে খুব খুশি। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পলাশ সাধুখাঁ জানান, বিদ্যালয়ে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করার পর ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে দিয়ে তাদের অভিভাবকদেরও সচেতন করা যায়। তার থেকেও বড় কথা আগামী প্রজন্মকে প্রস্তুত করা যায় রক্তদাতা হিসেবে। নবদ্বীপ ব্লাড ব্যাংক থেকে আগত প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই ৩০ জনের রক্ত সংগ্রহ করেছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৫০ জন যা পূরণ হয়ে যাবে অল্প সময়ের মধ্যেই। এরপর বিকালে বিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আচরণ এবং উপস্থিতি সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দক্ষতার জন্য পুরস্কৃত করা হবে ছাত্রছাত্রীদের।
Dec 19 2023, 17:40