পানিহাটিতে বিধায়ক নির্মল ঘোষের উদ্যোগেও সম্প্রীতির পদযাত্রা

কলকাতা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী ২২শে জানুয়ারি রাজ্যের প্রতিটি জেলার সমস্ত ব্লকে আয়োজন করা হয়েছে সম্প্রীতির পদযাত্রা। তেমনি পানিহাটি বিধানসভার বিধায়ক নির্মল ঘোষের উদ্যোগেও সম্প্রীতির পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হল পানিহাটিতে। পানিহাটি গান্ধী স্মৃতি বিজড়িত খাদি আশ্রম থেকে শুরু হয় এই পদযাত্রা শেষ হয় পানিহাটি গঙ্গা তীরবর্তী অঞ্চল পাঠ বাড়িতে। নির্মল ঘোষ ছাড়াও এই পথে যাত্রায় পানিহাটির সমস্ত স্তরের নেতা-নেত্রী সহ দলীয় কর্মীরা পা মেলান।দলনেত্রী নির্দেশে সম্প্রীতির এই পদযাত্রা অঞ্চলের সমস্ত স্তরের মানুষ সম্প্রীতি বজায় রাখবে এমনটাই জানালেন বিধায়ক নির্মল ঘোষ।

তৃণমূলের পক্ষে বিশাল সংহতি মিছিল সংগঠিত হল বারাসাতে

উত্তর ২৪ পরগনা: তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে বারাসাত শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অরুণ ভৌমিকের নেতৃত্বে সোমবার বিশাল সংহতি মিছিল সংগঠিত হল বারাসাতে। এদিন ওই মিছিল বারাসাত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সামনে থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় হেলাবটতলায়। এদিন ওই মিছিলে সব ধর্মের মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।

*ফটো গ্যালারী* *অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন ও রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা* ছবি: ANI.
*কালীঘাটে পুজো দিলেন মুখ্যমন্ত্রী,* *মমতার সংহতি যাত্রায় হাজরায় জনজোয়ার**


রাম মন্দিরে আজ সুসম্পন্ন হল রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠান। এই উদ্বোধনে যাননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূলের কেউ। বরং এর আগেই তৃণমূল ঘোষণা করেছিল যে এই দিনেই সংহতি মিছিল হবে। তার আগে কালীঘাট মন্দিরে হাজির হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। মায়ের কাছে পুজো দিচ্ছেন তিনি। নিজেই করছেন মন্ত্র উচ্চারণ।

এই মুহূর্তে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন সংহতি যাত্রায়। জনজোয়ার দেখা গেল মমতার এই পদযাত্রায়।তার সঙ্গে রয়েছেন সর্ব ধর্মের ধর্মগুরুরা, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তবে মিছিল শুরুতে তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।পরে অবশ্য তিনি মিছিল মধ্যে চলে যান।এই সংহতি যাত্রা শেষ হবে পার্ক সার্কাস ময়দানে। সেখানেই বক্তব্য রাখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ছবি: সঞ্জয় হাজরা (খবর কলকাতা)।

রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা উপলক্ষ্যে ৫০০০ মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হল লাড্ডূ

কলকাতা: অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন ও রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উৎসবে মেতে উঠেছেন রাম ভক্তরা।তেমনি কলকাতার বেলঘরিয়ার রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু ব্যানার্জির নেতৃত্বে রামলাল প্রাণ প্রতিষ্ঠা উপলক্ষ্যে ৫০০০ মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হল লাড্ডূ। এদিনের অনুষ্ঠানে রাজু ব্যানার্জি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা শীলভদ্র দত্ত সহ আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দ।

রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠায় খুশি দেশবাসী এমনই জানালেন শীল ভদ্র দত্ত। তিনি রাজ্য সরকারকেও কটাক্ষ করে বলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আজকের এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হলেও এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তার উল্টো পথেই হাটলেন।

রাজু ব্যানার্জি বলেন শুধু রাজ্যে নয় দেশের সমস্ত মানুষ রামলালার এই প্রাণ প্রতিষ্ঠা অপেক্ষায় ছিলেন আজ তাদের মনের ইচ্ছা পূর্ণ হল।

রাম মন্দির উদ্বোধনের আগেই টুইট অভিষেকের

রাম মন্দির উদ্বোধনের আগে টুইট করলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমেন্ট অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, ‘আমার ধর্ম আমাকে কোনও উপাসনালয়কে গ্রহণ করতে এবং আলিঙ্গন করতে শেখায়নি, সেটা মন্দির, মসজিদ, গির্জা বা গুরুদ্বারই হোক না কেন, যেখানে ঘৃণা, হিংসা এবং নিরপরাধদের মৃতদেহের ওপর নির্মিত হয়েছে।’

রাম মন্দির উদ্বোধনের আগেই এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের ওপর আক্রমণ, রাম মন্দির নিয়ে দীর্ঘদিনের মামলা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের মতো একাধিক বিতর্কিত বিষয় জুড়ে রয়েছে। সেই কথা মাথায় রেখেই অভিষেক এই বার্তা দিয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে ।

শহরের রাস্তায় রাম, লক্ষণ ও সীতা, সাথে গদা হাতে হনুমান, রামনগরী অযোধ্যায় রামলালার মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে দমদম হনুমান মন্দির থেকে

কলকাতা: সোমবার রামনগরী অযোধ্যায় রামলালার মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার আগে গোটা দেশ মেতেছে উৎসবে। পিছিয়ে নেই এই রাজ্য। গোটা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে রাম বন্দনা। তারই অংশ হিসেবে এদিন সকালে দমদম হনুমান মন্দির থেকে দমদম পার্ক পর্যন্ত এক কলস যাত্রার আয়োজন করা হয়। বিজেপি নেতা পীযূষ কানোরিয়ার নেতৃত্বে এই যাত্রা দমদম হনুমান মন্দির থেকে শুরু হয় দমদম রোড নাগেরবাজার হয়ে যশোর রোড ধরে পৌছায় দমদম পার্কে।মিছিলে অংশ দেন কামদুনির দুই প্রতিবাদী মুখ মৌসুমী ও টুম্পা। এছাড়াও যাত্রায় কলস ও পতাকা হাতে নিয়ে অংশ নেয় কয়েকশো মহিলা ও পুরুষ। তাদের এই কলস যাত্রায় অংশ নেয় রাম, লক্ষণ ও সীতা। সাথে গদা হাতে হনুমান। ঘোড়ার গাড়ি চেপে ভক্তদের সঙ্গে কলস যাত্রায় অংশ নেয় তারা।
রাম মন্দিরের উদ্বোধনের আগে কলকাতায় মিছিল শুভেন্দুর

অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধনের আগে কলকাতায় বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর মিছিল শুরু হল। দুর্গা প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা করবে বিজেপি।

গণেশ টকিজ-চিত্তরঞ্জন অ্যাভিউনিয়র রাম মন্দির মিছিল হবে। বিজেপির এই মিছিলের মূল ভাবনা অকালবোধন। অন্যদিকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাট থেকে সর্বধর্মসমন্বয় পদযাত্রা করবেন।

অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনে উচ্ছ্বাসিত সংখ্যালঘু মহল, মসজিদ- গির্জায় জ্বলবে আলো, হবে বিশেষ প্রার্থনা

এসবি নিউজ ব্যুরো: আজ রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে মসজিদ এবং গির্জায় জ্বলবে মোমবাতি ও প্রদীপ এমনটাই জানালেন নদীয়ার শান্তিপুর ব্লকের আরবান্দী ২ নম্বর পঞ্চায়েতের পাঁচপোতা পূর্বপাড়া জামে মসজিদের সংখ্যালঘু মোর্চার মন্ডল সভাপতি আশরাফ শেখ এবং শান্তিপুর ব্লকে আহবান দিয়ে ১ নম্বর পঞ্চায়েতের চাদরা ক্যাথলিক চার্চ এর ভারতীয় জনতা পার্টির সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা সভাপতি জোসেফ মন্ডল। তারা জানান, সোমবার অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর সেই আনন্দেই মেতে উঠেছে গোটা দেশবাসী। শুধু হিন্দু ধর্মালম্বনকারী মানুষেরাই নয়, সংখ্যালঘুর সকল সম্প্রদায়ের মানুষেরাই তাতে খুশি এমনটাই জানালেন তারা।

আর সেই কারণেই মন্দিরের পাশাপাশি শান্তিপুরের এই জামে মসজিদ এবং ক্যাথলিক চার্চেও জ্বলে উঠবে প্রদীপ এবং মোমবাতি। তারা জানান ইতিমধ্যেই আমরা প্রত্যেক বাড়িতে বাড়িতে অক্ষত প্রসাদ বিতরণ করেছি এবং তাদেরকে অনুরোধ করেছি আগামীকাল ৫টি করে প্রদীপ জ্বালাতে যদি প্রদীপের সমস্যা হয় তাহলে অন্তত ৫ টি করে মোমবাতি যাতে জ্বালান তারা।

সংখ্যালঘু মোর্চার মন্ডল সভাপতি আশরাফ শেখ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সমস্ত জাতিকেই শ্রদ্ধা ও সম্মান করেন। আর তাতেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

উল্লেখ্য, সনাতনী হিন্দু ধর্মের অত্যন্ত পবিত্র একটি দিন বলে মনে করছেন ভারতীয় জনতা পার্টি। তবে সনাতনী হিন্দু ধর্মের পাশাপাশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরাও যে একইভাবে আনন্দে উচ্ছ্বাসিত তা বলাই বাহুল্য।

আজ অযোধ্যার রাম মন্দিরের উদ্বোধন, বাঙালির প্রশ্ন নদিয়ার কৃত্তিবাসী রামায়ণ কবে ফিরবে ফ্রান্স থেকে ?

এসবি নিউজ ব্যুরো: আজ মহাসমারোহে উদ্বোধন হতে চলেছে অযোধ্যায় রাম মন্দির। অথচ বাঙালি তথা নদীয়াবাসির আবেগ কবি কৃত্তিবাস রচিত রামায়ণের মূল পান্ডুলিপি আজও ফ্রান্সে। উপেক্ষা আর অবহেলায় লালিত কৃত্তিবাসী রামায়ণ রচয়িতার রচনাস্থল।

ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভের অনেক আগেই আমাদের গর্বের আবেগের কৃত্তিবাস ওঝার হাতে লেখা কৃত্তিবাসী রামায়ণ চলে গিয়েছিল ফরাসি ঔপনিবেশিকদের হাতে। ১৭৯৪ সালে ফ্রান্সের জাতীয় গ্রন্থাগার বিবলিওথেক ন্যাশনালে এই পাণ্ডুলিপিটি ক্যাটালগে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমানে ফুলিয়ায় বয়রার সংগ্রহশালায় কবি কৃত্তিবাস ওঝার হাতে রচিত রামায়ণের মূল পাণ্ডুলিপির মাইক্রোফিল্ম ও সেই পাণ্ডুলিপির ফটোকপি রক্ষিত রয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতা লাভের ৭৬ বছর পরেও কেন্দ্রের কোন সরকার আজ পর্যন্ত তৎপর হয়নি বাঙালির শিকড় কৃত্তিবাসের স্বহস্তে রচিত কৃত্তিবাসী রামায়ণ দেশে ফিরিয়ে আনার।

আজ যখন কেন্দ্রের বর্তমান বিজেপি সরকারের তৎপরতায় ঘটা করে অযোধ্যায় রামলালার মন্দির উদ্বোধন হচ্ছে তখনও কৃত্তিবাসী রামায়ণ ফ্রান্স থেকে ফিরিয়ে আনার কোন উদ্যোগ নেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। উপেক্ষিতই থেকে গেল বাঙালির আবেগ।

পাশাপাশি, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ১৯৬০ সালে কৃত্তিবাসের স্মরণে ফুলিয়ার বয়রায় একটি গ্রন্থাগার তথা কমিউনিটি হল তৈরি করেছিল রাজ্য সরকার।১৯৬৭ সালে গ্রন্থাগারটি খুলে দেওয়া হয় সর্বসাধারণের জন্য। সেখানে ১৪ টি ভাষায় রামায়ণের অনুবাদ রয়েছে। আছে কৃত্তিবাসের স্বহস্তে রচিত রামায়ণের পান্ডুলিপির সেই ফটোকপি। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পথিকৃৎ, বাংলায় রামায়ণের রচয়িতা কৃত্তিবাস ওঝার স্মৃতিতে তৈরি সেই লাইব্রেরিও বর্তমানে অবহেলিত। লাইব্রেরীর আশেপাশে নোংরা আবর্জনায় ভর্তি। অবহেলার চিহ্ন চারিদিকে। সপ্তাহে মাত্র দু'দিন, শুক্র ও শনিবার একজন গ্রন্থাগারিক খোলা রাখেন ওই লাইব্রেরী ও সংগ্রহশালা। আরও একজন সপ্তাহে দু'দিন আসেন, কিন্তু এতোকিছু বাইরে থেকে যারা আসেন তাদের পক্ষে জেনে আসা সম্ভব নয়। স্বাভাবিক ভাবেই কৃত্তিবাস নামাঙ্কিত গ্রন্থাগারটিতে রক্ষিত অমূল্য সব বই পড়তে গিয়ে নিরাশ হয়ে ফিরতে হয় গবেষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি রাজ্য সরকারও উদাসীন বাঙালির এই আবাগের স্থানটি নিয়ে ?

নাকি সবটাই শুধু রাজনীতি, বাঙালির আবেগ বা বাংলা ভাষার ঐতিহ্য ও গরিমা নিয়ে মাথাব্যাথা নেই কোনো সরকারের।