Apr 05 2023, 17:27
*হনুমান জয়ন্তীতে সভা-সমাবেশে রাজ্যকে কড়া হাতে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট*
কলকাতা: রাম নবমী থেকে শিক্ষা নিয়ে হনুমান জয়ন্তীতে সভা-সমাবেশে রাজ্যকে কড়া হাতে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রয়োজনে রাজ্যকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিয়ে শান্তি বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টি এস সিবাগননম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন শুনানির শুরুতেই ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করে, অশান্তি এড়াতে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ভাল।
হাওড়া-রিষড়ায় রামনবমীর অশান্তি নিয়ে মামলার শুনানিতে এই মন্তব্য করে ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত জানিয়েছে, জমায়েত নিয়ন্ত্রনে রাজ্য চাইলে আইন প্রয়োগ করতে পারবে। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, সমাবেশের ভিডিও রেকর্ডিং করাতে হবে। আগাম হামলার ঘটনা রুখতে গোয়েন্দা বিভাগকে আরও সক্রিয় হতে পরামর্শ দিয়েছে আদালত।
ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, হনুমান জয়ন্তীর সমাবেশে কোনও রাজনৈতিক বা রাম নবমীর অশান্তি নিয়ে বক্তব্য রাখা যাবে না।হনুমানজয়ন্তীর জন্য কেন্দ্রের কাছে আধা সামরিক বাহিনী চাইবে রাজ্য।
আর রাজ্য চাইলেই অবিলম্বে কেন্দ্রকে তার সাহায্য করতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত। এদিকে হনুমান জয়ন্তী নিয়ে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় প্রস্তাবে বলেন, মিছিল বা শোভাযাত্রা যদি প্রশাসনের কোন শর্ত উলঙ্ঘন করে তাহলে তার দায় সেই প্রতিষ্ঠান এবং তার আধিকারিকদের ওপর বর্তাবে। পাশাপাশি কতজন শোভাযাত্রায় থাকবেন তা আগে থেকে পুলিশকে জানাতে হবে।
এছাড়াও শোভাযাত্রা শুরু এবং শেষ নির্দিষ্ট সময়ে করতে হবে। রাজ্য জানায়, ২০০০ আবেদন জমা পড়েছে পুজোর জন্য। এর পুরো রুটে ব্যারিকেড করা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। তবে স্পর্শকাতর এলাকায় ব্যারিকেড করা হবে। রাজ্য বলে, দূরত্ব ঠিক করবে পুলিশ। সেখানে স্বেচ্ছাসেবকদের নাম এবং ফোন নম্বর দিতে হবে।
একই এলাকার ক্ষেত্রে একই রুটে শোভাযাত্রা করলে সুবিধা হয়। স্পর্শকাতর এলাকায় সিসিটিভি বসানো হবে। মিছিলের শুরু এবং শেষপ্রান্তে পুলিশ থাকবে। রাজ্যের দাবী, রাম নবমী এবং হনুমানজয়ন্তী রাজ্যে পালিত হওয়া সাধারণ উৎসবের মধ্যে পরে না। শেষ ৫ বছর ধরে এটা শুরু হয়েছে। অপরিচিত সংগঠন অনুমতি চাইছে। পরের বছর থেকে ১৫ দিন আগে অনুমতি চাইতে হবে। শেষ ৫ বছর ধরে যারা এই শোভা যাত্রা করছেন শুরু তারাই অনুমতি পাবেন।
কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ বলে, যে ধরনের সমস্যার কথা বলা হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে যে রাজ্য পুলিশ একহাতে এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে না।
পাশের রাজ্য থেকে আধা - সামরিক বাহিনীর সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
আদালত বলে, মানুষের মনে কি করে ভরসা জোগানো যাবে। ছাদ থেকে পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠছে।রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগ কি করছিল ? এটা তাদের ব্যর্থতা। এদিকে, ডিভিশন বেঞ্চ হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে পাঠান ডায়মন্ড হারবারের একজন বিচারকের চিঠির প্রসঙ্গ তুলে ধরে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ওই বিচারক কর্মসূত্রে ডায়মন্ড হারবারে থাকলেও তার পরিবার শ্রীরামপুরে থাকে। নিরাপত্তার জন্য তিনি নিজে থানা এবং পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্তাদের কাছ থেকে সাহায্য চেয়ে পাননি। ২ ছেলে এবং মেয়েকে নিয়ে পরিবার শ্রীরামপুরে থাকেন। তিনি হাইকোর্টের কাছে নিরাপত্তা চাইছেন।
এই ঘটনায় সব বিচারকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়তে রাজ্যের এজিকে নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত বলে, যারা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন তাদের পরিবারের কি হবে ? মানুষের মনে আস্থা ফেরাবার জন্য বাহিনীর রুটমার্চ প্রয়োজন। শান্তি ফেরাবার জন্য কিছু করা দরকার বলে এজিকে বলে আদালত। ডিভিশন বেঞ্চ বলে, প্রাকৃতিক দূর্যোগ হলেও কেন্দ্রীয় টিম আসে। রাম নবমী বা হনুমান জয়ন্তীর মতো শোভাযাত্রার মিছিল কোন যানবাহন নিয়ে করতে দেওয়া ঠিক নয়। নির্দিষ্ট রুট ঠিক করে মিছিলের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করা দরকার বলে মন্তব্য করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি।![](https://streetbuzz.co.in/newsapp/storage/attachments/1/642d620c24aa6.png)
Apr 07 2023, 17:58