রাম মন্দির উদ্বোধনে মাতোয়ারা সারা দেশের হিন্দু সনাতনীরা, ধর্মপ্রাণ নদীয়ায় তার চূড়ান্ত প্রস্তুতি, ফুলিয়া কৃত্তিবাস মন্দিরে বাধ ভাঙ্গা উচ্ছ্
নদীয়া:আগামী ২২ শে জানুয়ারি অযোধ্যায় উদ্বোধন হতে চলেছে বহু প্রতীক্ষিত রাম মন্দির। সারা পৃথিবীতে বসবাসকারী সনাতন হিন্দু ধর্মীয় মন্দির সংস্থা এবং সংগঠন গুলির কাছে ইতিমধ্যেই আমন্ত্রণ পৌঁছে গেছে । তবে সনাতনীর মূল পিঠস্থান এ বাংলা বিশেষ করে ধর্মপ্রাণ নদিয়ার ব্যস্ততা আরো একটু বেশি। কৃষ্ণনগর থেকে টেরাকোটা শিল্পীর কাজ পৌঁছাচ্ছে সেখানে, নবদ্বীপ থেকে কীর্তন দল, বিভিন্ন গৌড়ীয় মঠের সদস্যরা, সারা ভারত শিল্পী সংসদ এর সদস্যরা বেশিরভাগ এ বাংলারই, তাই অযোধ্যায় উদ্বোধন হলেও বাংলার ধর্মপ্রাণ মানুষজন নাওয়া খাওয়া ভুলেছেন।
তবে যে রাম মন্দির নিয়ে এত মাতামাতি সেই রামায়ণ সংস্কৃত ভাষায় রচনা করেছিলেন বাল্মিকী কিন্তু বাংলা ভাষায় তা প্রথম অনুবাদ করেন, এবং বাঙালির কাছে তা স্বরলীকরণ করার ব্যবস্থা করেন নদীয়ার ফুলিয়া বয়রা অঞ্চলের কবি কৃত্তিবাস ওঝা। বিভিন্ন ভাষায় রামায়ণের অনুবাদ হলেও বাংলায় অনুবাদ সর্বশ্রেষ্ঠ বলে মানেন পৃথিবীর সকল কবি সাহিত্যিকরা শুধু তাই নয় মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা কবি কৃত্তিবাস শ্রী রাম পাঁচালীর রচয়িতা, এ ছাড়াও বেশ কয়েকটি ধর্মগ্রন্থ তিনি রচনা করেন কিন্তু দুঃখের বিষয়, বর্তমানে ন্যাশনাল লাইব্রেরীতে তার কোনো অস্তিত্ব নেই, অনুমান করা হয় চন্দননগরে ফরাসি উপনিবেশ স্থাপিত ছিল এবং সে সময়ে জল পথে যাতায়াত চলতো। ময়ূর সিংহাসন কোহিনুর হীরের মতন হয়তো মূল্যবান সেই পান্ডুলিপিও সেই সময় উধাও হয়। তবে বর্তমান সরকার তা অনুলিপি হিসাবে সংগ্রহ করে রেখেছে ন্যাশনাল লাইব্রেরির সংগ্রহশালায়।
ফুলিয়ার কৃত্তিবাস লাইব্রেরী এবং কৃত্তিবাস সংগ্রহশালায় রামায়ণ এবং কবি কৃত্তিবাস কে নিয়ে লেখা বিভিন্ন কবি সাহিত্যিকদের গ্রন্থ সুরক্ষিত রয়েছে। তবে সেই সকল বিষয়ে পড়াশোনা করা ছাত্র-ছাত্রীদের কিংবা পর্যটকদের দেখার জন্য ব্যবস্থা থাকলেও তা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে বিস্তর। অন্যদিকে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে চলা কৃত্তিবাস মেলা নিয়েও চলে রাজনৈতিক চাপানোতর। তবে ধর্মপ্রাণ মানুষজন এত বড় মাপের মহান এক কবি কে নিয়ে সরকারি উদাসীনতায় অসন্তুষ্ট। তারা জামাচ্ছেন সেই বট বৃক্ষ আজও রয়েছে যার তলায় বসে তিনি রামায়ণের অনুবাদ করেছিলেন, রয়েছে তাঁর সমাধিস্থলও। তাই তাই পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র বিন্দু হওয়া দরকার এই স্থান যা একমাত্র সরকারি উদ্যোগেই সম্ভব।
তবে আসন্ন রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে তারাও পেয়েছেন ডাক। তাই উচ্ছ্বাসের সাথে খোল কীর্তন সহযোগে তারাও পৌঁছবেন। তাই চূড়ান্ত প্রস্তুতি হিসেবে মন্দির প্রাঙ্গণে সবসময় সবসময় ধর্মপ্রাণ ভক্তদের আনাগোনা। সর্বক্ষণ চলছে রাম নাম সংকীর্তন, কবি কৃত্তিবাস নামাঙ্কিত উচ্চ বিদ্যালয় ৭৫ তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে ছাত্রছাত্রীদের সাজানো হয়েছে রাম সীতা সহ নানান অধ্যায়ের চরিত্র। নাচ গান নাটক আবৃত্তির মধ্যে দিয়ে প্রচারিত হচ্ছে সেই রামেরই বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী।
Dec 30 2023, 17:41